নিজস্ব প্রতিবেদক | আমর বাংলাদেশ
ভালোবাসা, আত্মত্যাগ আর প্রতারণার এক নির্মম গল্প রচিত হয়েছে সাভারের কলমা এলাকায়। যেখানে স্ত্রী নিজের কিডনি দিয়ে মৃত্যুর মুখ থেকে স্বামীকে ফিরিয়ে আনেন, অথচ সুস্থ হয়ে সেই স্বামীই জড়িয়ে পড়েন পরকীয়ায়, এবং শেষমেশ স্ত্রীকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
৩৫ বছর বয়সী উম্মে সাহেদীনা টুনি ২০০৬ সালে প্রবাসী মো. তারেকের সঙ্গে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে একমাত্র সন্তান আজমাইন দিব্য জন্ম নেয় ২০০৭ সালে। ২০০৮ সালে তারেক কিডনি রোগে আক্রান্ত হলে একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেন স্ত্রী টুনি।
কিডনি দিয়ে প্রাণ বাঁচান স্ত্রী
ভারতের সিএমসি ও অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসার পর ২০১৯ সালে টুনি নিজের একটি কিডনি স্বামীকে দান করেন। অপারেশন সফল হলেও, কয়েক মাস পরেই তারেকের চরিত্রে পরিবর্তন আসতে শুরু করে।
শুরু হয় পরকীয়া ও নির্যাতন
সুস্থ হওয়ার পর তারেক ঢাকায় ফিরে অনলাইন জুয়া ও তাহমিনা মেরি নামের এক ডিভোর্সি নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে টুনিকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
আইনগত লড়াই ও মামলা
-
২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪: সাভার থানায় অভিযোগ করেন টুনি
-
২২ এপ্রিল: নারী নির্যাতন ও যৌতুক আইনে আদালতে মামলা
-
২৪ এপ্রিল: তারেক গ্রেপ্তার
-
৪ জুন: জামিনে মুক্তি, তারপর আত্মগোপন
টুনি অভিযোগ করেন, তারেক এখন তাকে ডিভোর্স দিতে এবং বাড়ি নিজের নামে লিখে দিতে চাপ দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, কিডনি দেওয়ার পর ICU তে থাকাকালীন পর্যন্ত তারেক তাকে গালিগালাজ ও মানসিক নির্যাতন করেছেন।
আইনি প্রক্রিয়া চলছে
টুনির আইনজীবী অ্যাডভোকেট নেহার ফারুক জানান, "তারেক কেবল নারী নির্যাতনই নয়, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সংযোজন আইনেরও লঙ্ঘন করেছেন। চার্জশিট হাতে পেলেই আমরা তার জামিন বাতিলের আবেদন করব।"
প্রতিবেশী ও পরিবারের ক্ষোভ
প্রতিবেশীরা বলেন, "টুনি যা করেছে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। অথচ আজ সেই মেয়েটাই ন্যায়ের জন্য ঘুরছে।"
