✍️ Amer Bangladesh Desk
সফলতা কারও বংশগত অধিকার নয়। নিজের পরিশ্রম, ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায় থাকলে শূন্য থেকে শুরু করেও অর্জন করা যায় অসাধারণ কিছু। তার জীবন্ত প্রমাণ মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম — যিনি একসময় বিক্রয়কর্মী ছিলেন, আর আজ দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী নোমান গ্রুপ–এর প্রতিষ্ঠাতা।
☕ ৬৭ টাকায় ঢাকায় শুরু, গন্তব্য ৮৫০০ কোটি টাকার সাম্রাজ্য
১৯৬৮ সালে মাত্র ৬৭ টাকা হাতে নিয়ে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থেকে ঢাকায় আসেন নুরুল ইসলাম। ইসলামপুরের দোকানে দোকানে কাপড় বিক্রি করে দিন শুরু হতো, শেষ হতো মেসে ফিরে রাতে। বাবার সংসারের হাল ধরতে এসে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াই শুরু হয়েছিল সেখান থেকেই।
🏭 শিল্পপতি হওয়ার পথচলা
১৯৭৬ সালে মাত্র ৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে আরটেক্স ফ্যাব্রিকস নামে একটি ক্ষুদ্র কারখানা কেনেন। এরপর একে একে গড়ে তোলেন মরিয়ম টেক্সটাইল, নাজনীন ফ্যাব্রিকসসহ আরও প্রতিষ্ঠান।
১৯৮৭ সালে বড় ছেলের নামে প্রতিষ্ঠা করেন নোমান গ্রুপ। আজ এই গ্রুপের অধীনে ৩২টি কারখানা এবং ৬৫ হাজারের বেশি কর্মী কাজ করেন।
🌍 রপ্তানিতে সাফল্যের স্বর্ণপথ
২০০০ সালে শুরু হয় আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়াসহ বহু দেশে যায় তাদের পণ্য। শুধু জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফ্যাব্রিকস থেকেই ২০১৮ সালে রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৬ কোটি ডলার বা প্রায় ১৪০০ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য!
তাদের গ্রাহকদের মধ্যে রয়েছে আইকিয়া, ওয়ালমার্ট, টার্গেট, কেমার্ট, এইচ অ্যান্ড এমসহ নামীদামি প্রতিষ্ঠান।
🛠️ বাধা এসেছিল, কিন্তু হার মানেননি
২০০৯ সালে গড়ে তোলা সাতটি কারখানা গ্যাস সংযোগের অভাবে ৭ বছর বন্ধ ছিল। এ সময় শুধু সুদ পরিশোধেই গেছে ২০০০ কোটি টাকার বেশি।
তবে ধৈর্য হারাননি, হাল ছাড়েননি। আবারও উঠে দাঁড়িয়েছেন।
📈 ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
নোমান গ্রুপ এখন সিনথেটিক ও পলিয়েস্টার বস্ত্র উৎপাদনে বড় বিনিয়োগের পরিকল্পনায় আছে। তারা দেশের সেরা রপ্তানিকারক হিসেবে ৫০টি জাতীয় রপ্তানি পদক পাওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
🏆 একটি জীবন, একটি অনুপ্রেরণা
নুরুল ইসলাম বলেন,
"আমি যে ব্যবসাটা বুঝি, সেটাকেই করেছি। পোশাক ও বস্ত্র খাত আমার রক্তে। সন্তানদেরও বলেছি—যে ব্যবসা বুঝবে না, তা কখনো কোরো না।"
আজ তিনি গুলশানের অভিজাত এলাকায় থাকেন, কিন্তু তাঁর হৃদয়ে এখনও সেই ইসলামপুরের কষ্টের দিনগুলোর স্মৃতি জাগরুক।
❓ FAQ (প্রশ্নোত্তর)
প্রশ্ন: মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম কে?
উত্তর: তিনি নোমান গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, যিনি মাত্র ৬৭ টাকা হাতে নিয়ে ঢাকায় এসে আজ দেশের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠীর মালিক হয়েছেন।
প্রশ্ন: নোমান গ্রুপ কবে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তর: ১৯৮৭ সালে বড় ছেলে এ এস এম রফিকুল ইসলামের নামে “নোমান গ্রুপ” প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রশ্ন: গ্রুপটির কর্মী সংখ্যা কত?
উত্তর: বর্তমানে প্রায় ৬৫ হাজার কর্মী এই গ্রুপে কাজ করেন।
প্রশ্ন: প্রধান রপ্তানি পণ্য কী?
উত্তর: হোম টেক্সটাইল পণ্য, যেমন চাদর, তোয়ালে, মশারি, পলিয়েস্টার কাপড় ইত্যাদি।
.png)